SSC Bangla 2nd Paper || অনুচ্ছেদ : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ

 বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে যে স্বাধীনতা তাকে চিরসমুন্নত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের প্রেরণা জোগাবে চিরদিন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করলেও প্রকৃত মুক্তি আসেনি বাঙালি জাতির। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট, ৫৮ সালে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করে। তখনই চূড়ান্ত স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু চূড়ান্ত ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী  ২৫ই মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের বর্বরতা চালায় দেশজুড়ে। বাংলার জনতা সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানিদের অত্যাচার রুখে দেয়। দীর্ঘ নয় মাস ধরে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধ চলে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। ৩০ লক্ষ শহিদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গৌরব, আমাদের চেতনা। এই চেতনাকে মনেপ্রাণে ধারণ করেই আমাদের জাতি গঠনে কাজ করতে হবে।

Previous
Next Post »